সুকুমার রায় এর কবিতা সংগ্রহ
Contents
- 1 সুকুমার রায়
- 1.0.1 ‘ভাল ছেলের’ নালিশ __সুকুমার রায়
- 1.0.2 অন্ধ মেয়ে __সুকুমার রায় – বাংলা কবিতা
- 1.0.3 আদুরে পুতুল __সুকুমার রায় – বাংলা কবিতা
- 1.0.4 আনন্দ __সুকুমার রায় – বাংলা কবিতা
- 1.0.5 আহ্লাদী __সুকুমার রায়
- 1.0.6 আড়ি __সুকুমার রায়
- 1.0.7 হনহন পনপন – সুকুমার রায়
- 1.0.8 আবোল তাবোল – ১ __সুকুমার রায়
- 1.0.9 আবোল তাবোল – ২ __সুকুমার রায়
- 1.0.10 আবোল তাবোল – ৩ __সুকুমার রায়
- 1.0.11 হিংসুটি
- 1.0.12 শ্রীশ্রীবর্ণমালাতত্ব
- 1.0.13 শোন শোন গল্প শোন
- 1.0.14 মাসি গো মাসি
- 1.0.15 বিষম ভোজ
- 1.0.16 বলব কি ভাই
- 1.0.17 বন্দনা
- 1.0.18 নদী
- 1.0.19 দুষ্টুলোকের মিষ্টি কথায়
- 1.0.20 ঢপ ঢপ ঢাক ঢোল
- 1.0.21 টুকরো ছড়া
- 1.0.22 ছোটে হনহন
- 1.0.23 আকাশের গায়ে
- 1.0.24 কহ ভাই কহ রে
- 1.0.25 আয়রে আলো আয়
- 1.0.26 চলে হন্ হন্
- 1.0.27 হনহন পনপন
- 1.0.28 আশ্চর্য কবিতা
- 1.0.29 আবোল তাবোল – ৩
- 1.0.30 শুনেছ কি বলে গেল
- 1.0.31 মেঘ
- 1.0.32 মহাভারতঃ আদিপর্ব
- 1.0.33 মন্ডা ক্লাবের কয়েকটি আমন্ত্রণপত্র
- 1.0.34 বিষম কাণ্ড
- 1.0.35 বিবিধ
- 1.0.36 নাচন
- 1.0.37 গ্রীষ্ম
- 1.0.38 গ্রীষ্ম (ঐ এল বৈশাখ)
- 1.0.39 খোকার ভাবনা
- 1.0.40 খোকা ঘুমায়
- 1.0.41 অতীতের ছবি
- 1.0.42 ভাল ছেলের নালিশ
- 1.0.43 হিতে-বিপরীত
- 1.0.44 হিংসুটিদের গান
- 1.0.45 হারিয়ে পাওয়া
- 1.0.46 হাতুড়ে
- 1.0.47 সাহস
- 1.0.48 সাবধান
- 1.0.49 সাধে কি বলে গাধা
- 1.0.50 সম্পাদকের দশা
- 1.0.51 সন্দেশ
- 1.0.52 সঙ্গীহারা
- 1.0.53 শ্রীশ্রীবর্ণমালাতত্ত্ব
- 1.0.54 শ্রীগোবিন্দ-কথা
- 1.0.55 শ্রাবণে
- 1.0.56 শব্দকল্পদ্রুম
- 1.0.57 লোভী ছেলে
- 1.0.58 লড়াই-ক্ষ্যাপা
- 1.0.59 লক্ষ্মী
- 1.0.60 রামগরুড়ের ছানা
- 1.0.61 বোম্বাগড়ের রাজা
- 1.0.62 বেশ বলেছ
- 1.0.63 বেজায় খুশি
- 1.0.64 বুঝবার ভুল
- 1.0.65 বাবু
- 1.0.66 বর্ষার কবিতা
- 1.0.67 বর্ষ শেষ
- 1.0.68 বর্ষ গেল বর্ষ এল
- 1.0.69 বদ্যি বুড়ো
- 1.0.70 বড়াই
- 1.0.71 ফসকে গেল
- 1.0.72 পালোয়ান
- 1.0.73 নিরুপায়
- 1.0.74 নারদ নারদ
- 1.0.75 নন্দগুপি
- 1.0.76 দিনের হিসাব
- 1.0.77 ডানপিটে
- 1.0.78 ঠিকানা
- 1.0.79 ট্যাঁশ গরু
- 1.0.80 টিক্ টিক্ টং
- 1.0.81 পাগলা দাশু
- 1.0.82 জালা-কুঁজো সংবাদ
- 1.0.83 ছুটি (ছুটি ছুটি ছুটি)
- 1.0.84 ছুটি (ঘুচবে জ্বালা)
- 1.0.85 ছবি ও গল্প
- 1.0.86 গ্রীষ্ম (সর্বনেশে গ্রীষ্ম)
- 1.0.87 খুচরো ছড়া
- 1.0.88 কেন সব কুকুরগুলো
- 1.0.89 কানা-খোঁড়া সংবাদ
- 1.0.90 কলিকাতা কোথা রে
- 1.0.91 কত বড়
- 1.0.92 ও বাবা
- 1.0.93 আহ্লাদী
- 1.0.94 আশ্চর্য
- 1.0.95 আবোল তাবোল – ২
- 1.0.96 আদুরে পুতুল
- 1.0.97 কিম্ভূত!
- 1.0.98 একুশে আইন
- 1.0.99 গন্ধ বিচার
- 1.0.100 বাবুরাম সাপুড়ে
- 1.0.101 অবাক কাণ্ড
- 1.0.102 অন্ধ মেয়ে
- 1.0.103 জীবনের হিসেব
- 1.0.104 তেজিয়ান
- 1.0.105 নিঃস্বার্থ
- 1.0.106 মেঘের খেয়াল
- 1.0.107 মূর্খ মাছি
- 1.0.108 ভালরে ভাল
- 1.0.109 ভারি মজা
সুকুমার রায়
নাম | সুকুমার রায়/Sukumar Ray |
জন্ম | ৩০শে অক্টোবর ১৮৮৭ (কোলকাতা) |
অভিভাবক | উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর (বাবা) বিধুমুখী দেবী (মা) |
দাম্পত্যসঙ্গী | সুপ্রভা দেবী |
সন্তান | সত্যজিৎ রায় |
জনপ্রিয় সাহিত্যকর্ম | আবোল তাবোল, হ-য-ব-র-ল, পাগলা দাশু, কাতুকুতু বুড়ো, হুঁকো মুখো হ্যাংলা ইত্যাদি |
জাতীয়তা | ভারতীয় |
ধর্ম | হিন্দু |
ছদ্দনাম | উহ্যনাম পণ্ডিত |
মৃত্যু | ১০ই সেপ্টেম্বর, ১৯২৩ |
মৃত্যুস্থান | ১০০ নং গড়পার রোড, কোলকাতা |
বাংলা সাহিত্যে সুকুমার রায় হলেন এমন একজন ব্যক্তিত্ব, যার লেখা অসাধারণ কিছু সাহিত্যকর্ম আজও প্রত্যেক বাঙালীর মনে অমর হয়ে আছে | বিংশ শতাব্দীর ভারত তথা বাংলা সাহিত্য জগতে তিনি হয়ে ওঠেন এক নবদিগন্তের পথিক | কবি, গল্পকার ও সাহিত্যিক সুকুমার রায় ভারতীয় উপমহাদেশে সর্বপ্রথম সার্থকভাবে; অদ্ভুত এক সাহিত্য রীতির প্রবর্তন করেন যা প্রত্যেক বয়সের পাঠকদের মন কাড়তে সমানভাবে সক্ষম হয় |
Sukumar Roy Life History:
সুকুমার রায়ের জন্ম হয় ১৮৮৭ সালের ৩০শে অক্টোবর, কোলকাতার এক ব্রাহ্ম পরিবারে | তাঁর বাবার নাম ছিলো উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, যিনি কিনা বাংলার একজন বিখ্যাত শিশুসাহিত্যক ছিলেন আর মা বিধুমুখী দেবী ছিলেন ব্রাহ্মসমাজের প্রধান সংস্কারক দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের মেয়ে |
তুমি কি জানো, সুকুমার রায়ের আদি বাড়ি কোথায় ছিলো?
তাঁর আদি বাড়ি ছিলো বর্তমান বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলার মসূয়া গ্রামে | তাঁর মোট ২জন ভাই ও ৩জন বোন ছিলো, যাদের নাম যথাক্রমে- সুবিনয়, সুবিমল, সুখলতা, পুণ্যলতা ও শান্তিলতা ছিলো |
সুকুমার রায়ের, মহান সাহিত্যিক হয়ে ওঠার পিছনে তাঁর পরিবারের কিন্তু অবদান ছিলো প্রচুর | কারণ তাঁর পারিবারিক পরিবেশ ছিলো একদম সাহিত্য অনুরাগী, যার সুবাদে তাঁর মধ্যকার সাহিত্যিক প্রতিভার বিকাশ ঘটে |
শোনা যায়, তিনি নাকি ছোটবেলা থেকেই মুখে মুখে নানা ধরণের ছড়া তৈরি করে ফেলতেন অনায়াসেই | এমনকি গান গাইতেন, নাটক করতেন আর কবিতাও লিখতেন | এক কথায় যদি বলতে হয় তাহলে সেইসময় থেকেই তিনি একধরনের মজাদার গোছের মানুষ ছিলেন এবং সবাইকে নেতৃত্ব দিতে খুব ভালোবাসতেন |
তাঁর বোন পুণ্যলতা তাঁর সম্পর্কে একসময় বলেছিলেন- “দাদা যেমন আমাদের খেলাধুলা ও সব কিছুরই পাণ্ডা ছিলো, তেমনি বন্ধুবান্ধব ও সহপাঠীদের মধ্যেও সে সর্দার ছিলো । তার মধ্যে এমন কিছু বিশেষত্ব ছিল যারজন্য সবাই তাকে বেশ মানতো । এমনকি বড়রাও তার কথার বেশ মূল্য দিতো”
Sukumar Roy Education:
চলো বন্ধু, এবার তবে জেনেনি সুকুমার রায়ের শিক্ষাজীবন সম্পর্কীয় কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সম্পর্কে |
সাহিত্যিক সুকুমার রায়, কলকাতার সিটি স্কুল থেকে এন্ট্রাস পাশ করেন এবং তারপর কোলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ১৯০৬ সালে রসায়ন ও পদার্থবিদ্যায় অনার্স লাভের পর, তিনি মুদ্রণবিদ্যা সম্পর্কে উচ্চতর শিক্ষালাভের জন্য ১৯১১ সালে বিদেশে যান |
সেখানে যাওয়ার পর তিনি ফটোগ্রাফি এবং মুদ্রণ প্রযুক্তির ওপর পড়াশোনা করেন |
সুকুমার যখন ইংল্যান্ডে পড়াশোনা করছিলেন, সেইসময় অন্যদিকে তাঁর বাবা উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী জমি কিনে একটা উন্নত-মানের রঙিন হাফটোন ব্লক তৈরি করেন এবং সেইসাথে নিজস্ব ছাপাখানাও স্থাপন করেন |
এইসবই তিনি তৈরী করেছিলেন ছোটদের জন্য একটা মাসিক পত্রিকা “সন্দেশের”, প্রকাশনার উদ্দেশ্যেই | কিন্তু ১৯১৩ সালে ইংল্যান্ড থেকে পড়াশোনা শেষ করে সুকুমার রায় যখন কোলকাতায় ফিরে আসেন, তার ঠিক অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তাঁর বাবা উপেন্দ্রকিশোরের মৃত্যু হয় |
বাবার মৃত্যুর পর একজন দায়িত্ববান ছেলে হিসাবে এরপর তিনিই সন্দেশ পত্রিকার সম্পাদনার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন এবং সেই পত্রিকাতেই নিজের অভূতপূর্ব সাহিত্যকর্ম গুলো একে একে প্রকাশ করতে থাকেন |
দেখতে দেখতে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই সুকুমার রায়, অল্পবয়সী পাঠকদের মাঝে এক প্রিয় পাত্র হয়ে ওঠেন এবং সেইসাথে প্রচুর মধ্যবয়সী পাঠকদের কাছেও সমান জনপ্রিয়তা লাভ করতে সক্ষম হন|
বাবার মৃত্যুর পর আট বছর ধরে তিনি এই সন্দেশ পত্রিকার ও পারিবারিক ছাপাখানা পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন | তারপর সেইসবের দায়িত্ব তিনি আসতে আসতে তাঁর ছোটভাইকেই সম্পূর্ণরূপে দিয়ে দেন |
Sukumar Roy Work Life:
সুকুমার রায়ের কর্মজীবন সম্পর্কে বলার আগে এই তথ্য সম্পর্কে তোমার অবশ্যই জেনে রাখা দরকার | প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়ার সময়ই তিনি কিন্তু গড়ে তুলেছিলেন, “ননসেন্স ক্লাব” | এই ক্লাবের মুখপত্র ছিল হাতে লেখা কাগজ-“সাড়ে বত্রিশ ভাজা” |
জানা যায়, সাড়ে বত্রিশ ভাজার পাতাতেই নাকি সুকুমার রায় জীবনের সর্বপ্রথম নিজের রচিত হাস্যরসযুক্ত কিছু লেখা প্রকাশ করেন | আর এই ক্লাবের জন্য তিনি দুটো নাটকও রচনা করেছিলেন, যেগুলোর নাম যথাক্রমে ছিলো- “ঝালাপালা” ও “লক্ষণের শক্তিশেল” |
ক্লাবের সদ্যসের নিয়েই তিনি, এই দুটো নাটককে সবার মাঝে পরিবেশন করেন | আর তুমি হয়তো বললে এটা বিশ্বাস করবেনা, ননসেন্স ক্লাবের প্রতিটা নাটক দেখার জন্য, সেইসময়কার প্রচুর ছেলে ও বুড়োরা ভীষন ভিড় জমাতো এবং তাদের সবারই পছন্দের নাট্যকার ছিলেন সুকুমার রায় |
তাঁর বোন পুণ্যলতা এই নাটক সম্পর্কে একদা লিখেছিলেন –
“বাঁধা স্টেজ নেই, সীন নেই, সাজসজ্জা ও মেকআপ বিশেষ কিছুই নেই, শুধু কথা,সুরে,ভাবে, ভঙ্গিতেই তাদের অভিনয়ের বাহাদুরি ফুটে উঠতো, দাদা নাটক লিখতো, অভিনয় শেখাতো । হাঁদারামের অভিনয় করতে দাদার জুড়ি কেউ ছিল না । অভিনয় করতে ওরা নিজেরা যেমন আনন্দ পেতো, তেমনি সবাইকে আমোদে মাতিয়ে তুলতো । চারিদিকে উচ্ছ্বসিত হাসির স্রোত বইয়ে দিতো । ননসেন্স ক্লাবের অভিনয় দেখার জন্য সবাই উৎসুকও হয়ে থাকতোও”
এইসব নাটক করা ছাড়াও, সন্দেশের সম্পাদক থাকাকালীন তাঁর লেখা ছড়া, গল্প ও প্রবন্ধ সবারই ভীষন পছন্দের ছিলো, যা আমি আগেই তোমাকে বলেছি | আজও বাংলা শিশুসাহিত্যে তাঁর রচিত সব সাহিত্যকর্মই মাইলফলক হয়ে আছে আর ভবিষ্যতেও একই থাকবে |
তোমাকে তো আমি এটাও আগে বলেছিলাম যে তিনি, প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে অনার্স করার পর ইংল্যান্ডে পড়তে যান |
এরপর সেখান থেকে ফিরে এসে তিনি আবারও “মনডে ক্লাব” নামে ননসেন্স ক্লাবেরই মতো একই ধরণের আরেকটা ক্লাব খুলেছিলেন | এই ক্লাবের সাপ্তাহিক সমাবেশে, সদস্যরা সব বিষয় সম্পর্কেই আলোচনা করতেন ।
সুকুমার রায় এই সাপ্তাহিক সভার কয়েকটি আমন্ত্রণপত্র মজার ছড়ার আকারে তৈরীও করেছিলেন | সেগুলোর বিষয়বস্তু ছিল মূলত উপস্থিতির অনুরোধ এবং বিশেষ সভার ঘোষণা ইত্যাদি ।
Sukumar Roy & Brahmo Samaj:
সাংস্কৃতিক কাজকর্ম ছাড়াও সুকুমার কিন্তু ছিলেন ব্রাহ্মসমাজের সংস্কারপন্থী গোষ্ঠীর এক তরুণ নেতা | এই ব্রাহ্মসমাজ সম্পর্কে তৎকালীন সময়ে সবাই বলতো যে, এই সংগঠনের সদস্যরা মূলত একেশ্বরবাদী ও অদ্বৈতবাদী হিন্দু পুরান ও উপনিষদের মতাদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন |
এঁদের সমাজ সংস্কার বিষয়ক কাজকর্ম ও রীতিনীতি বাকিদের থেকে অনেক আলাদা ছিলো |
সুকুমার রায়, ব্রাহ্ম সমাজের ইতিহাসকে সরল ভাষায় প্রত্যেকের মাঝে তুলে ধরার উদ্দেশ্যে “অতীতের কথা” নামক একটা কাব্য রচনা করেন | এছাড়াও তিনি ছোটদের মধ্যে ব্রাহ্ম সমাজের মতাদর্শের উপস্থপনা করার লক্ষে সেই কাব্যকে বইয়ের আকারে প্রকাশও করেছিলেন |
Sukumar Roy & His Marriage life:
ইংল্যান্ডে থেকে নিজের পড়াশোনা শেষ করার পর, দুই মাসের মধ্যেই সুকুমারের বিয়ে হয় জগৎচন্দ্র দাশের মেজ মেয়ে সুপ্রভা দেবীর সঙ্গে | তাঁর ডাক নাম ছিল টুলু |
শোনা যায়, সুকুমার রায়ের বাবা উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে বিয়েতে উপস্থিত থাকার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করেন । কিন্তু রবীন্দ্রনাথ তাঁকে চিঠি দিয়ে জানান, শিলাইদহে জমিদারীর কাজে ব্যস্ত থাকার দরুন তিনি হয়তো তাঁর ছেলের বিয়েতে উপস্থিত থাকতে পারবেন না । কিন্তু অবশেষে শেষ পর্যন্ত রবীন্দ্রনাথ, সুকুমার রায়ের বিয়েতে এসেছিলেন ।
এরপর বিয়ের ঠিক ৮ বছর পর অর্থ্যাৎ ১৯২১ সালের ২রা মে তারিখে সুপ্রভা দেবী তাঁর একমাত্র পুত্রসন্তানের জন্ম দেন | যার নাম দেওয়া হয়েছিলো সত্যজিৎ | যিনি পরবর্তীকালে বাংলা তথা ভারতীয় সিনেমা জগতের এক উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক হয়ে ওঠেন, যা আমরা হয়তো প্রত্যেকেই জানি |
Some Famous Works of Sukumar Roy Are:
আবোল তাবোল (১৯২৩)
পাগলা দাশু (১৯৪০)
হেশোরাম হুশিয়ারের ডায়েরি
খাই-খাই (১৯৫০)
হ য ব র ল (১৯২৮)
শব্দ কল্প দ্রুম
চলচ্চিত্রচঞ্চরী
অবাক জলপান
লক্ষণের শক্তিশেল
ঝালাপালা
বহুরুপী (১৯৪৪)
ভাষার অত্যাচার
Death of Sukumar Roy:
সত্যজিৎ রায় জন্মগ্রহণ করার কিছু মাস পর থেকেই সুকুমার রায়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়া শুরু হয় | পরে চিকিৎসা শুরু করার পর জানা যায়, তিনি কালাজ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন এবং সেটাকে ঠিক করা একদম অসম্ভব | কারণ তখন সেইযুগে কালাজ্বরের উপযুক্ত চিকিৎসা পদ্ধতি ও ওষুধের আবিষ্কার হয়ে ওঠেনি |
কিন্তু মৃত্যু প্রায় নিশ্চিত জেনেও তিনি শেষসময়ে অসাধারণ মানসিক স্থৈর্যের পরিচয় দিয়েছিলেন | কারণ এত বড় একটা রোগে আক্রান্ত হওয়ার পরও তিনি নিজের কাজকে একটা দিনের জন্যও বন্ধ করেননি বরং আরো উদ্যমের সাথে সেটাকে করে গেছিলেন |
এই সম্পর্কে অবশ্য জানা যায়, সত্যজিৎ রায়ের একটা লেখায় | যেখানে তিনি তাঁর বাবার শেষের দিনগুলো সম্পর্কে লিখেছিলেন এই কথাগুলো:
“রুগ্ন অবস্থাতেও বাবার কাজের পরিমাণ ও উৎকর্ষ দেখলে অবাক হতাম । শুধু লেখা বা আঁকার কাজেই নয়, ছাপার কাজেও যে তিনি অসুখের মধ্যে অনেক চিন্তা ব্যয় করেছেন তারও প্রমাণ রয়েছে। একটি নোটবুকে তাঁর আবিষ্কৃত কয়েকটা মুদ্রণ পদ্ধতির তালিকা রয়েছে । এইগুলো পেটেন্ট নেবার পরিকল্পনা তাঁর মনে ছিলো, কিন্তু কাজে হয়ে ওঠেনি”
অবশেষে ১৯২৩ সালের ১০ই সেপ্টেম্বর, সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে ১০০নং গড়পার রোডের বাড়িতে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে সাহিত্যিক সুকুমার রায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন |
সবশেষে এটাই বলতে চাই, তিনি যদিও মাত্র অল্প সময়ের জন্য পৃথিবীতে এসেছিলেন ঠিকই কিন্তু তিনি আজও তাঁর মহান সব সাহিত্যকর্ম গুলোর মধ্য দিয়ে প্রত্যেক বাঙালীর মনে অমর হয়ে আছেন সমানভাবে | সাহিত্য শিল্পে তাঁর অবদানকে সত্যিই কেউ কোনোদিনই ভুলতে পারবেনা | তিনি সর্বদা আমাদের মতো প্রত্যেক বাঙালী পাঠকদের কাছে চিরদিনই আদর্শ হয়েই থাকবেন |